জামালপুর প্রতিনিধি:
জামালপুর
সদর উপজেলার ৩ নং লক্ষীরচর
ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. আছান আলীর হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নিহতের পরিবার।
মঙ্গলবার
সকালে জামালপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত ইউপি সদস্য আছান আলীর ছোট ভাই বকুল হোসেন।
বকুল
হোসেন তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, বিগত ২০২৩ সালের ১০ মার্চ জামালপুর
সদর উপজেলার নান্দিনা বাজারে পূর্ব শত্রুতার জেরে তার উপর হামলা করে লক্ষীরচর ইউনিয়নের মৃত ছবর উদ্দিনের ছেলে মো. কবির (৫০), মো. মোস্তফার ছেলে লাইজু মিয়া (৩৫), হারুনুর রশিদের ছেলে সম্রাট আলী (৩৭), আঃ রহিমের ছেলে
মো. মিলন (৩৫) সহ প্রায় ৩০
থেকে ৪০ জনের একটি
সন্ত্রাসী বাহীনি। সন্ত্রাসীরা তাকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে মৃত ভেবে ফেলে রেখে চলে যায়। এরপর তিনি চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় এই বর্বরোচিত হামলার
বিচার চেয়ে জামালপুর সদর থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন তারই বড় ভাই লক্ষীরচর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. আছান আলী। ওই মামলায় সর্বমোট
২১ জনকে নামীয় আসামিসহ অজ্ঞাত নামা আরও ১০/১৫ জনকে
আসামি করা হয়। এরপর থেকে ওই মামলার আসামিরা
তার বড় ভাই ইউপি সদস্য মো. আছান আলীকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে হুমকি, ধামকি দিতে থাকে। এমতাবস্থায় মামলা তুলে না নেওয়ায় বিগত
২০২৩ সালের ৫ এপ্রিলে আছান
আলীকে ওই আসামিরা দেশিয়
অস্ত্র ও লাঠি সোঠা
নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে ধাওয়া করে। এই ঘটনার পর আছান
আলী নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে জামালপুর সদর থানায় একটি জিডি করেন।আসামিদের নামে থানায় এজাহার দায়ের ও নিজের জীবনের
নিরাপত্তা চাইতে গিয়ে প্রাণ দিতে হলো তার বড় ভাই আছান আলীকে। চলতি বছরের ৩১ আগস্ট লক্ষীরচর
ইউনিয়ন পরিষদের কাজ শেষে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় সন্ত্রাসী হারুন অর রশিদের নির্দেশে
কবির, লাইজু, রাজু মিয়া, সম্রাট, মিলন, শিমুল, সাঈদ, সেলিম, রিফাত, মাসুদ সহ প্রায় ৩০
থেকে ৪০ জন সন্ত্রাসী
ইউপি সদস্য মো. আছান আলীকে গতিরোধ করে রাম দা, চাইনিজ কুড়াল, কোপা দা দিয়ে এলোপাথারি
কোপাতে থাকে। এসময় আছান আলীর ডাক চিৎকার শুনে স্থানীয়রা গুরুত্বর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে জামালপুর
জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তাররা তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে আছান আলীর অবস্থা আরও অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকগণ উন্নত চিকিৎসার জন্য তাৎক্ষনিক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড
করেন। ওইদিন রাত ৯ টা ৫০
মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তাররা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
বকুল
হোসেন আরও বলেন, শুধুমাত্র তার উপর হামলার বিচার চেয়ে মামলার বাদি হওয়ায় আমার ভাইকে প্রাণ দিতে হয়েছে। আছান আলী হত্যার ঘটনায় জামালপুর সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত কোন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। সংবাদ সম্মেলনে এই নৃশংস হত্যার
বিচারসহ এই হত্যাকান্ডের সাথে
জড়িতদের ফাঁসি দাবি করেন নিহতের পরিবার।